২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটলা। প্রায় ৫০ এরও বেশি ছাত্র ছাত্রী পায়নি তাদের অ্যাডমিট কার্ড। মামলা উঠেছে কলকাতা উচ্চ আদালতে। গাফিলতি পর্ষদের নাকি বিদ্যালয়ের? কী জানালেন কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি? আদৌ কি এই বছরে ছাত্র-ছাত্রীরা মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারবে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়েই রইল আজকের প্রতিবেদনটি।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার আয়োজিত হতে চলেছে ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ থেকে। ইতিমধ্যেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে এই পরীক্ষার এডমিট কার্ড। বিদ্যালয় গুলির পক্ষ থেকে এডমিট কার্ড বিতরণের পরেই শুরু হয় গোলযোগ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত একাধিক বিদ্যালয় মিলিয়ে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থীর এডমিট কার্ড আসেনি বলে অভিযোগ জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি শুরু হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষা ছাত্রছাত্রীদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। বিদ্যালয়ের কারণে হোক কিংবা পর্ষদের কারণে ছাত্রছাত্রীদের এই ভুলের দায়ভার নিতে হবে কেন? সেই কারণেই ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের পক্ষ থেকে কলকাতা উচ্চ আদালতে বিচার চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চ এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মাধ্যমিক ইতিহাসে ভয়? ৮ নম্বরের এই প্রশ্নগুলি পড়ে গেলেই পরীক্ষায় বাজিমাত
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ-
১) কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে উদ্দেশ্য করে যত শীঘ্র সম্ভব পোর্টাল খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পর্ষদের পক্ষ থেকে আজ সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে অনলাইন পোর্টাল চালু করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
২) যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এখনো পর্যন্ত এডমিট কার্ড হাতে পাননি, তাদের জন্য অবিলম্বে এডমিট কার্ডের বন্দোবস্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
৩) এই মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা তাই আগামী ৯ তারিখের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি বিনা খরচায় এডমিট কার্ড পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব বিদ্যালয়ের। এর জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই।
৪) যে সমস্ত বিদ্যালয়ের ভুলবশত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এডমিট কার্ড পৌঁছয়নি, সেই সমস্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমান দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
৫) এর পাশাপাশি যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের এডমিট কার্ডে ভুল তথ্য রয়েছে, তারাও সরাসরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে তাদের এডমিট কার্ড জমা করে নতুন এডমিট কার্ড পেতে সক্ষম হবেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে একাধিক ছাত্র ছাত্রীর এনরলমেন্টে ভুল হয়েছে। এর জন্যই বিপাকে পড়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। এই বছরে প্রথমবারের জন্য অনলাইন মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়েছিল ছাত্র-ছাত্রীদের। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকেই মূলত এই রেজিস্ট্রেশন এর প্রক্রিয়াটি করা হয়েছিল। বিভিন্ন ভুল সংশোধনের জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে একাধিকবার অনলাইন পোর্টাল চালু করে দেওয়া হলেও বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই পরীক্ষার কিছুদিন আগে এমন সমস্যার মুখে পড়তে হলো ছাত্র-ছাত্রীদের।