চাকরির খবর

পিওন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, এক অফুরন্ত জীবন সংগ্রামের কাহিনী

Advertisement

সম্প্রতি অসাধ্য সাধন করেছেন বিহারের কমল কিশোর মন্ডল নামে ৪২ বছর বয়স্ক এক প্রৌঢ়। কিছুদিন আগে অবধিও যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসরদের টেবিলে চা,কফি, জল, বইপত্র ইত্যাদি পৌঁছে দিতেন অর্থাৎ পিয়নের কাজ করতেন কমল কিশোর, ভাগ্যের দুর্বিপাকে এবং কঠোর পরিশ্রমের ফল হিসেবে এখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তিনি।

পারিবারিক অনটনের জেরে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতক পাশের পর কমল কিশোরকে পড়াশোনায় ইতি টানতে হয়েছিল। বাবার ছোট্ট চা দোকানের দায়িত্ব সামলেছেন, সেই সঙ্গে তিনি নাইট গার্ডের ডিউটিও করেছেন। একদিন হঠাৎ করেই তিলকা মাঝি ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিওনের চাকরির প্রস্তাব আসে। চাকরিটা নিয়ে নেন তিনি।

চাকরির খবরঃ রাজ্যে ক্লার্ক পদে কর্মী নিয়োগ

এখান থেকেই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। বিভিন্ন কাজের ফাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের দেখে তার মনেও পড়াশোনা তাগিদ জন্মায়। তাই কাজের সঙ্গে সঙ্গে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে তিনি এম.এ পড়া শুরু করে দেন। দুই বছরের এম.এ ডিগ্রি লাভ করার পর তিনি পি.এইচ.ডি করতে ইচ্ছুক ছিলেন। পি.এইচ.ডি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাভের জন্য তাকে বেশ কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর অদম্য ইচ্ছের কাছে হার মানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সালের শুরু করেন পিএইচডি। গবেষণা শেষ করতে সময় লাগে চার বছর। এরপরেই তিনি নেট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেন। নেট পরীক্ষায় পাশ করার পর লেকচারার পদের জন্য আবেদন করা শুরু করেন।

আরও পড়ুনঃ প্রাইমারি টেট অনলাইন ফর্ম ফিলাপ

জীবনে যত কঠিন পরিস্থিতি সামনে আসুক না কেন, সামনে থেকে লড়াই করলে একসময় জয় আসবেই তা প্রমাণ করলেন কমল কিশোর। ২০২০ সালে বিহার স্টেট ইউনিভার্সিটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, তিলকা মাঝি ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের জন্য চারটি শূন্যপদ রয়েছে। নিজের পুরনো কর্মক্ষেত্রেই অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের লোভ সামলাতে পারেননি কমল কিশোর। তিনি ওই শূন্যপদে আবেদন করেন। সম্প্রতি রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে এবং তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হয়েছেন।

এই খবরে নিতান্তই খুশি কমলকিশোর সহ পরিবারের সকলে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসররাও খুব খুশি। যেসব প্রফেসররা সামনে থেকে কমল কিশোরের সংগ্রাম দেখেছেন, তারা গর্বিত বোধ করেছেন। এবং সেই সঙ্গে বলেন যে কমল কিশোরের জীবন সংগ্রাম আগামীর ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করবে।

Related Articles