পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষা হতে আর মাত্র বাকি দশটা দিন। ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হতে চলেছে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষা সম্বন্ধিত বিভিন্ন কড়া পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই গৃহীত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে। তবে এবারে পরীক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবকদেরও দেহ তল্লাশির নির্দেশ দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পরীক্ষার আগের মুহূর্তে প্রয়োজনীয় নির্দেশগুলি অবশ্যই জেনে নেওয়া দরকার ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। আজকের প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই বিশেষ নির্দেশ সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন একাধিক অনীতিকর কার্যক্রম ঘটে থাকে। এর জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে একাধিক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। এইবারে পরীক্ষা যাতে সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিমুক্তভাবে আয়োজন করা যায় সেই দিকটি খতিয়ে দেখছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলি পর্যালোচনা করে আবারও পর্ষদের পক্ষ থেকে নতুন নির্দেশনামা জারি করা হলো।
এতদিন পর্যন্ত পরীক্ষার হলে ঢোকার পূর্বে পরীক্ষার্থীদের ভালোভাবে তল্লাশি করে তবে পরীক্ষা দিতে পাঠানো হতো। তবে এবার থেকে পরীক্ষার্থীর কোন প্রয়োজনের কারণে অভিভাবকরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলে, তাদের সম্পূর্ণরূপে দেহ তল্লাশি করা হবে। প্রকৃত নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অভিভাবক বা কোন আত্মীয়ের প্রবেশের কোনরকম নিয়ম নেই। তবে অনেক সময় বিভিন্ন বিশেষ কারণে অভিভাবকদের পরীক্ষার হলে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।
অভিভাবকদের পরীক্ষার হলে ঢোকানোর জন্য পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলিতে একাধিক পূর্বপরিকল্পিত ঘটনাক্রম তৈরি করেছিলেন শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকেরা। এরপরে পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন অথবা টুকলির মত জিনিস পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গত বছরেই এই ধরনের একটি বড় পরিকল্পনার রহস্যভেদ করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2025 পিডিএফ
গত বছরে এক পরীক্ষা কেন্দ্রে একটি শিশুকে নিয়ে প্রবেশ করেন পরীক্ষার্থীর এক আত্মীয়া। এখানে তিনি দাবি করেন যে শিশুটির মা পরীক্ষা দিচ্ছেন, মা শিশুকে না খাওয়ালে তার কান্না থামবে না। এই যুক্তির কারণে মানবতার খাতিরে সেই আত্মিয়াকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়া হয়। এরপরে তিনি পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং ধরা পড়ে যান শিক্ষকদের কাছে।
এই ঘটনার পর্যালোচনা করলে জানা যায় যে সেই শিক্ষার্থীর কোন সন্তান নেই। সম্পূর্ণভাবে পূর্বপরিকল্পিত ঘটনাক্রম সাজিয়ে অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছিলেন শিক্ষার্থী এবং তার আত্মীয়া। এছাড়াও পূর্ববর্তী বছরের পরীক্ষাগুলিতে ওষুধ দেওয়ার নাম করে বা অন্যান্য একাধিক প্রয়োজন সৃষ্টি করে অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে অনীতিকর কাজে সহায়তা করেছেন।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক গণিতের উপপাদ্য- সম্পাদ্য নিয়ে ভয়? রইলো অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সাজেশন
এই কারণে চলতি বছরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে যখনই কোন অভিভাবক বা পরীক্ষার্থীর আত্মীয় পরীক্ষার হলে কোন রকম কারণ দেখিয়ে প্রবেশ করার অনুরোধ করবেন, তাকে পুলিশের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে দেহ তল্লাশি করে তবেই পরীক্ষার হলে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। মাধ্যমিকের প্রায় ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থীকে পুলিশি পদ্ধতি মেনে দেহ তল্লাশি করা সম্ভব না হলেও অভিভাবকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে এই তল্লাশি করা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক বাংলা প্রতিবেদন রচনা ও প্রবন্ধ রচনা সাজেশন