এসএসসি দুর্নীতি মামলায় পশ্চিমবঙ্গের ২০১৬ প্যানেলের সমস্ত কর্মচারীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে যেমন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন বিভিন্ন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মী। যদিও পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণার মাধ্যমে অস্থায়ীভাবে চাকরি ফিরে পান যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সদয় মনোভাব একেবারেই পেলেন না গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য অনুসারে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মচারীর ক্ষেত্রেই অধিকতর দুর্নীতি হয়েছে। এই কারণে এই সমস্ত কর্মচারীদের অস্থায়ীভাবেও চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এবার সেই সমস্ত কর্মচারীদের সমস্যা নিবারণ করল মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিবাদে সরব ছিলেন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মচারীরা। তাদের মধ্যে অনেকেই দুর্নীতির পথ অবলম্বন না করে চাকরি পেয়েছিলেন। যার ফলে সংসার চালানো এবং অন্যান্য বিষয়গুলি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত প্রার্থীরা। সরকারি চাকরিহারা কর্মচারীদের একদল প্রতিনিধি হিসেবে শনিবার মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ঐদিন ফোন কলের মাধ্যমে জানান, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পিটিশন দায়ের করা হবে। এই উদ্দেশ্যে আইনি কাগজপত্র তৈরি হচ্ছে।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সরকারের গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মচারীদের মাসিক বেতনের কথা জানতে চান ওই বৈঠকে। সুপ্রিম কোর্টে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা প্রতি মাসে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মাসিক ভাতা পাবেন। এমনটাই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে, ‘আপনারা বর্তমানে মাইনে পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাদের সংসার চলবে কী করে? তাই সামাজিক সুরক্ষা রক্ষার্থে যতদিন না (আদালতে) বিষয়টির চূড়ান্ত ফয়সালা হচ্ছে, ততদিন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি’র চাকরিহারাদের প্রতি মাসে ভাতা দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুনঃ WB HS Result 2025 Date: উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্ট কবে বেরোবে? দেখে নিন আজকের আপডেট
এবার প্রশ্ন হচ্ছে প্রতি মাসে কত টাকা ভাতা পাবেন এই কর্মচারীরা?
সরকারি বেতন অনুসারে প্রতি মাসে রাজ্যের গ্রুপ সি কর্মচারীরা ৩৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মচারীরা ২৭ হাজার টাকা বেতন পান। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে, বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি এবং কর্মচারীদের সংসার সামলানোর উদ্দেশ্যেই গ্রুপ সি কর্মচারীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মচারীদের মাসিক ২০ হাজার টাকা আর্থিক ভাতা দেওয়া হবে। এই অর্থ প্রদানের দায়িত্বে থাকবে রাজ্যের শ্রম দপ্তর।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যে নতুন করে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আপাতত ভাবে সুরক্ষিত বোধ করছেন বহু চাকরিহারা। তবে অনেকেই এই আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৩০ হাজার টাকা করার দাবি তোলেন। এর পাশাপাশি ঐদিন এসএসসির যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা শিক্ষা দপ্তরের কাছে এসে পৌঁছয়। আগের তালিকা অনুসারে বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি ছিল বলে এবারে সংশোধিত তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এরপরে পুনরায় বিশেষজ্ঞদের দ্বারা এই তালিকাটি বিশ্লেষণ করা হবে এবং এই তালিকা পাঠানো হবে বলে জানা যাচ্ছে।