অনেক অপেক্ষার পর পরীক্ষা শেষের ৫০ দিনের মধ্যে প্রকাশিত হলো ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্ট। সংসদের ঘোষণা অনুসারে প্রথম দশের তালিকায় এই বছর ৭২ জন কৃতি ছাত্র-ছাত্রীর নাম রয়েছে। বিগত ১০ বছরের সবথেকে ভালো উচ্চমাধ্যমিক ফলাফল এই বছর। বেড়েছে পাশের হার। ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হল এই উচ্চমাধ্যমিক। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেই যেমন একাধিক চাকরির জন্য প্রচেষ্টা করা যায়, তেমনই নিজেদের ভবিষ্যৎ বানানোর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।
এক কথায় বলতে গেলে, স্কুল জীবন শেষ করে কলেজ বা পেশাগত জীবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার ধাপ উচ্চমাধ্যমিক। কিন্তু অনেক সময় এই দরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের সেই স্বপ্নপূরণ হয় না। এর মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত টাকার অভাব। তবে সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে দরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে একাধিক স্কলারশিপ বা মেধাবৃত্তি চালু রয়েছে। পরীক্ষার রেজাল্টের মাধ্যমেই এই স্কলারশিপ গুলির সুযোগ নিতে পারেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তাহলে চলুন আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিক পাশের গুরুত্বপূর্ণ ৫টি স্কলারশিপ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১) স্বামী বিবেকানন্দ মেরিটকাম মিনস স্কলারশিপ (Higher Secondary Scholarships):
উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কলেজের পড়াশোনার উদ্দেশ্যে স্বামী বিবেকানন্দ মেরিটকাম মিন্স স্কলারশিপ দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং বা পলিটেকনিক এর মত পেশাগত কোর্সে ভর্তি হলে ৬০ হাজার টাকা , বিভিন্ন আন্ডারগ্রাজুয়েট কোর্সে ভর্তি হলে ১২ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এছাড়াও স্নাতকোত্তর পড়াশোনার জন্যেও এই স্কলারশিপ পাওয়া যায়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যাদের অন্ততপক্ষে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর রয়েছে তারা এই স্কলারশিপের আবেদন জানাতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে পারিবারিক বার্ষিক আয় ২.৫০ লক্ষ টাকার কম হতে হবে।
২) Higher Secondary Scholarships নবান্ন স্কলারশিপ:
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তহবিল থেকে মেধাবী দরিদ্র পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নবান্ন স্কলারশিপ দেওয়া হয়। স্কলারশিপ এর মাধ্যমে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা ১০ হাজার টাকা মেধাবৃত্তি পেয়ে থাকে। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৫০ শতাংশর উর্ধ্বে নম্বর থাকলে এই স্কলারশিপ এ আবেদন জানাতে পারেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে এই স্কলারশিপে আবেদন জানানোর জন্য আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ১,২০,০০০/- টাকার মধ্যে হওয়া আবশ্যক।
৩) ন্যাশনাল স্কলারশিপ:
কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃত্তি পাওয়া যায়। ভারতীয় নাগরিক ছাত্রছাত্রীরা উচ্চমাধ্যমিক বা মাধ্যমিক পরীক্ষায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলে এই স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন জানাতে পারেন (Higher Secondary Scholarships)। এই স্কলারশিপ এ আবেদন জানানোর জন্য আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার কম হতে হবে।
প্রতিদিন চাকরি খবরের আপডেট পেতে আমাদের WhatsApp চ্যানেল ফলো করুন 👇👇
৪) জিপি বিড়লা স্কলারশিপ:
বেসরকারি স্কলারশিপ গুলির মধ্যে জিপি বিরলা এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন এর এই স্কলারশিপ অন্যতম। ছাত্রছাত্রীরা এখনই এই স্কলারশিপের আবেদন জানাতে পারেন। জিপি বিড়লা স্কলারশিপের মাধ্যমে নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীর টিউশন ফি থেকে শুরু করে যাবতীয় পড়াশোনার খরচ বহন করা হয়। এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা বই কেনার জন্য এককালীন ৭০০০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ বাবদ সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর থাকলে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারেন। আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় তিন লক্ষ টাকার কম হলে এখানে আবেদন জানাতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক- উচ্চ মাধ্যমিক পাশে সেরা স্কলারশিপের আপডেট
৫) টাটা স্কলারশিপ (Higher Secondary Scholarships):
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য টাটা স্কলারশিপ এ আবেদন শুরু হয়ে গিয়েছে। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে উপযুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ১০০০০ টাকা থেকে ১২০০০ টাকার মধ্যে বৃত্তি দেওয়া হয়। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্ততপক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বর থাকলে এই স্কলারশিপ এ আবেদন জানাতে পারবে। ২.৫ লক্ষ টাকা পারিবারিক বার্ষিক আয়ের ছাত্রছাত্রীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। এই বছর সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে আবেদন চলবে।