এক নজরে
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল: ভারতের প্রতিটি রাজ্যের একটি করে প্রধান ফসল আছে। ভৌগলিক পরিবেশ অনুযায়ী রাজ্যগুলির প্রধান ফসল আলাদা আলাদা হয়। আপনাদের মধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন আছে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল কি? আজকের প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হল। এই প্রতিবেদন থেকে আপনারা পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল -এর নাম এবং তার সমন্ধে সমস্ত তথ্য জানতে পারেবন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল হল আমন ও বোরো ধান। এই দুই প্রকার ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে আউশ ধান কিছু কিছু অঞ্চলে চাষ করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ সমভূমি এলাকাতে ধানের চাষ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মূল ক্ষেত্রফলের মধ্যে প্রায় 5.8 মিলিয়ন হেক্টর ভূমিতে ধান চাষ হয়। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলাতে সবচেয়ে বেশি ধানের চাষ হয়। এই কারণে বর্ধমান জেলাকে পশ্চিমবঙ্গের “ধানের গোলা” নাম দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল ধান গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম হল ওরিজা স্যাটিভা (Oryza sativa)। এশিয়া মহাদেশের ধানের সমস্ত প্রকার প্রজাতিকে এই ওরিজা সাটিভা নাম দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আফ্রিকা মহাদেশের ধানের প্রজাতিগুলিকে ওরিজা গ্ল্যাবেরিমা (Oryza glabrerrima) নামে অভিহিত করা হয়েছে।
● জলবায়ু — ধান চাষের জন্য 16-30° সেলসিয়াস উষ্ণতা এবং 100-200 সেমি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। চারাগাছ বৃদ্ধির সময় অধিক আর্দ্রতা ও উষ্ণতা প্রয়োজন। ধান পাকা ও কাটার সময় শুষ্ক আবহাওয়ার প্রয়োজন।
● মাটি — উর্বর দোআঁশ ও এঁটেল মাটি এবং নীচু সমতলভূমি ধান চাষের পক্ষে আদর্শ ভূমি। মাটিতে কাদার ভাগ বেশি থাকলে জল দাঁড়ানোর সুবিধা হয়।
● জমি বা ভূমি — জমিতে জল দাঁড়ানোর ব্যবস্থা থাকলে ধানের চাষ ভালো হয়। তাই নদী উপত্যকা, বদ্বীপ ও উপকূলীয় সমতলভূমি ধান চাষের পক্ষে অনুকূল।
এশিয়া মহাদেশের ধানের প্রজাতিগুলির মধ্যে ভারতে প্রধানত 50,000 টি ভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ হয়। পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি প্রচলিত ধানের প্রজাতি হল – লাল স্বর্ণ, বাদশাভোগ, মুগী, হাজার দশ, বাসমতি, গোবিন্দভোগ, IR-64, কবিরাজসাল, দেরাদুন ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ ভারতের দীর্ঘতম নদী বাঁধ কোনটি?
➥ আমন ধান চাষের সময় — পশ্চিমবঙ্গের আমন সিজিনের ধান চাষের ক্ষেত্রে মূলত জ্যৈষ্ঠ – আষাঢ় মাস নাগাদ এই ধানের বীজতলা তৈরীর কাজ শুরু হয়। বীজতলা তৈরী হওয়ার পর শ্রাবণ – ভাদ্র মাসে বীজতলা মূল জমিতে রোপন করা হয়। এরপর অগ্রহায়ণ – পৌষ মাস জুড়ে এই ধান কাটা হয়।
➥ বোরো ধান চাষের সময় — আমন ধানের মরশুম শেষ হওয়ার পর বোরো ধানের কাজ শুরু হয়। অগ্রহায়ণ মাসের মধ্যবর্তী সময় থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত সময়ে এই ধানের বীজতলা তৈরী করা হয়। এরপর মাঘ – ফাল্গুন মাস নাগাদ এই ধানের বীজতলা মূল জমিতে রোপন করা হয়। বৈশাখ – জ্যৈষ্ঠ মাস জুড়ে এই ধান কাটা হয়।
ধান চাষের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বর্ধমান জেলা। এই জেলাতে প্রায় 20.04 লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়। এরপরে দ্বিতীয় স্থানে আছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। এই জেলার উৎপাদিত ধানের পরিমান প্রায় 15.04 লক্ষ মেট্রিক টন। এছাড়া মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুর, ২৪ পরগণা, বাঁকুড়া, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ইত্যাদি জেলাগুলি মিলিয়ে মোট 18 টি জেলায় ধানের চাষ হয়।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় পশু কি?
ভারতের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ধান (চাল) উৎপাদন করে। সরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী 2015-16 সালের পশ্চিমবঙ্গের মোট উৎপাদিত চালের পরিমান ছিল 15.75 মিলিয়ন টন। বিশ্বে চীনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধান (চাল) উৎপাদনকারী দেশ হল ভারত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্বের মোট চালের প্রায় 12-15% উৎপাদন করে।
ধান থেকে উৎপাদিত চাল আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি। মূলত এই চালকে ভাত হিসেবে অধিকাংশ মানুষ গ্রহন। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বৃহদ অংশে চাল থেকে তৈরী মুড়ি, চিড়া ইত্যাদি মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল হল ধান। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে গম, পাট, আলু, আঁখ, পান ইত্যাদি কৃষিজ ফসল ব্যাপক ভাবে চাষ করা হয়।
ধানের পরবর্তী স্থানে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় প্রধান কৃষিজ ফসল হল পাট। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা অর্থাৎ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এবং গঙ্গা নদীর দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে পাট গাছের চাষ হয়।
ভারতের মধ্যে ধান উৎপাদনে প্রথম রাজ্য হল পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর গড়ে প্রায় 15 থেকে 22 লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়।
WBP Constable Practice Set 2024: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে কনস্টেবল ও লেডি কনস্টেবল নিয়োগ ২০২৪ -এর…
ভারতের জাতীয় প্রতীক: ১৯৪৭ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকারের থেকে দেশ ভাগের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে…
প্রতিদিনের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স 2024: জাতীয় এবং রাজ্য স্তরের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের চাকরিপ্রার্থীদের প্রস্তুতির…
WB Gram Panchayet Practice Set 2024: পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে…
চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে। "৫০ শতাংশ ডিএ…
মাধ্যমিক ফল প্রকাশের পর কয়েকটা দিন সময় ইতিমধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এবারের মাধ্যমিক…